অনলাইন ডেস্ক নিউজ::
ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা না নিলে গণ পদত্যাগ
বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে হেরে টাকা ফেরত পেতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাপ দিচ্ছেন প্রার্থী। এ অভিযোগ জেলা পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য পদপ্রার্থী ও শাজাহানপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালেবুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সাত ভোটারের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গত ১৭ই অক্টোবর বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদপ্রার্থী ছিলেন জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আছাদুর রহমান দুলু, শাজাহানপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালেবুল ইসলাম ও উপজেলা শ্রমিক লীগের
সভাপতি রুবেল সরকার। নির্বাচনে রুবেল পান ১৩ ভোট। তালেবুল পান ৩৭ ভোট। আছাদুর পান ৭৯ ভোট।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, পরাজিত তালেবুল প্রাপ্ত ভোটের দ্বিগুণেরও বেশি ভোটারকে টাকা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নির্বাচনে হারার পর দিন থেকে তিনি ভোটারদের ফোন করে টাকা ফেরত চাচ্ছেন।
একই ইউনিয়ন পরিষদের এক নারী সদস্য জানান যে, তার স্বামী ভ্যানচালক। গত শুক্রবার রাতে তালেবুল তাকে ফোন করে টাকা ফেরত দিতে বলেন; কিন্তু টাকা খরচ হয়ে যাওয়ায় তিনি গালাগাল করেন। টাকা ফেরত না দিলে মেরে হাড়হাড্ডি ভেঙে ফেলবেন বলে গত শনিবার একদল লোক পাঠিয়ে বাড়িতে গিয়ে হুমকি ধমকি দেয়।
আরেক সদস্য জানান যে, তালেবুলকে তিনি ভোট দেবেন না জানানোর পরও টাকা নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। না নিলে তার রোষানলে পড়তে হতো।
খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য বলেন যে, টাকা ফেরত না দিলে আমাকে খেয়ে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
পূর্বাঞ্চলের এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান যে, তালেবুল ফোন করে সদস্যদের কাছ থেকে টাকা ফেরত নিয়ে দিতে বলেছেন। খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন যে, এটা নেহায়েত বোকামি।
আরেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান যে, ভোটে যারা টাকা দিয়েছেন এবং যারা নিয়েছেন তারা উভয়ই সমান অপরাধী।
উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আবু জাফর আলী বলেন যে, ভোট কেনাবেচা করা অপরাধ। মারধর, ভয়ভীতির হুমকি বা ধমকি দেওয়াই অপরাধ। এমনটি ঘটনা ঘটে থাকলে যে, কেউ চাইলে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।
উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নীরেন্দ্র মোহন সাহা বলেন, ‘উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই।
পরাজিত প্রার্থী জনাব, তালেবুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন যে, ‘কাউকে কোনো ধরনের হুমকি বা ধামকি দিইনি আমি। তা ছাড়াও ভোটাররা সব প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কেউ যদি টাকা নিয়ে ভোট দিয়ে না থাকেন তাহলে সেই টাকা ফেরত দেওয়া উচিত।
২০১৬ইং সালের জেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণ-বিধিমালার ১৭ নম্বার ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোটারদের কোনোরূপ উপঢৌকন বা বকশিশ দিতে পারবেন না। এ বিধি লঙ্ঘন করলে ৩১ নম্বার ধারায় বলা হয়েছে, প্রার্থী বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ছয় মাসের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় শাস্তি হতে পারে
এবিষয়ে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক বলেন যে, নির্বাচনের আগে এবং পরের দুই দিনের মধ্যে এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে আচরণবিধি মোতাবেক তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেত। নির্দিষ্ট সময়ের পর কিছু করার নেই। তবে ভুক্ত-ভোগীরা চাইলে সিভিল কোর্টের (দেওয়ানি আদালত) আশ্রয় নিতে পারেন।