শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন

মৌলভীবাজারের এক বিধবা নারীর উপর নির্যাতন ও সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা: স্থানীয় প্রভাবশালীদের হুমকির অভিযোগ

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা: / ৩০ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত : শনিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৪

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজিলার বাসিন্দা এক বিধবা নারী নুরুন নাহার বেগমের উপর চলমান নিপীড়ন, সামাজিক হয়রানি, এবং প্রাণনাশের হুমকির গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, স্বামী মো. নুরুজ্জামান চৌধুরীর অকাল মৃত্যুর পর থেকে তিনি সন্তানদের নিয়ে শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তির অংশে বসবাস করছিলেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের মধ্যে একজন, তার দেবর কামরুজ্জামান চৌধুরী, তাকে উচ্ছেদের লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে হুমকি ও হয়রানিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৬ সালের ১৬ মে তার স্বামীর মৃত্যু ঘটলে পরিবারের পৈতৃক সম্পত্তিতে বৈধভাবে বসবাস শুরু করেন। তবে ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই তার দেবর তার বাড়িতে এসে জোরপূর্বক জমি ছাড়ার দাবি জানান এবং তাকে নিয়ে সমাজে অপমানজনক অপপ্রচার চালান।

এরপর ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে, তিনি কর্মস্থল ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্সে মৌখিকভাবে অপমানের শিকার হন এবং চরিত্র হননের অভিযোগে চাকরি হারানোর হুমকিও পান। অক্টোবরে শুরু হয় অজানা নম্বর থেকে ফোন করে কুপ্রস্তাব দেওয়া এবং অশালীন মন্তব্য করার ঘটনা, যা তার মতে পূর্বপরিকল্পিত এবং দেবর কর্তৃক প্ররোচিত।

সবচেয়ে ভীতিকর ঘটনা ঘটে ৭ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে, যখন কামরুজ্জামান ও তার সহযোগীরা নুরুন নাহারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার পুত্র মুহতাসিমকে শারীরিকভাবে আঘাত করে। আহত অবস্থায় তাকে চিকিৎসার জন্য নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নুরুন নাহার স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পরদিন পুনরায় তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নাহিদের প্রভাবের কারণে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ১১ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হুমকি আরও বাড়তে থাকে।

সবশেষে, গত ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ সন্ধ্যায় অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথে তিনজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক অটো-রিকশা থেকে নামানোর চেষ্টা করে এবং এলাকা ছাড়ার আলটিমেটাম দেয়। পথচারীদের হস্তক্ষেপে অপহরণ চেষ্টা ব্যর্থ হলেও ওই ঘটনায় নুরুন নাহার আহত হন।

ভুক্তভোগী পরিবারটি অভিযোগ করেছেন যে, এ ঘটনার পেছনে রয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের প্রশ্রয় এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা। নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরও বিচার না পাওয়ায় নুরুন নাহার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

এই ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করা হলে কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।


আরো সংবাদ পড়ুন...